২৬ শে মার্চ এর রচনা ২০২২

২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়।

 এরপর নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এই স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলাদেশের ৩০ লাখ শহীদ ২০ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারান। 

তাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে স্বাধীনতা দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা এই নিবন্ধে স্বাধীনতা দিবসের প্রবন্ধ দেখিয়েছি।

২৬ শে মার্চ এর রচনা ২০২২
২৬ শে মার্চ এর রচনা ২০২২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) রচনা

  • ভূমিকা
  • মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি
  • পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণ
  • স্বাধীনতার ঘোষণা
  • গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার গঠন
  • মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ
  • \পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত বিজয়
  • উপসংহার


ভূমিকা: 

বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। 

কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার রয়েছে দীর্ঘ রক্তাক্ত ইতিহাস। এক সাগর রক্ত ​​আর লাখো প্রাণের বিনিময়ে এসেছে এই স্বাধীনতা।

মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি: 

1947 সালে ভারত বিভাগের পর বাঙালিরা পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের অংশ হিসেবে পায়। 

কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানিরা তাদের শাসনামলে শোষণ-বঞ্চনার কারণে দেশটিকে পাকিস্তানের উপনিবেশে পরিণত করে। পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানকে নানাভাবে শোষণ করতে থাকে। 

আর এর প্রথম আঘাত আমাদের সংস্কৃতির ওপর। 1952 সালে বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ তাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে আওয়াজ দিয়েছিল। 

1952 সালে ভাষা আন্দোলন, তারপর 1962 সালে শিক্ষা আন্দোলন, 1966 সালে 6 দফা, 1969 সালে গণবিদ্রোহ, অবশেষে 1971 সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণ: 

1971 সালের 25 মার্চ মধ্যরাতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইট নামে দেশে নিরীহ মানুষদের হত্যা করে। 

তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইউপিআর সদর দফতরের বিভিন্ন আবাসিক হলে ছাত্রদের অপহরণ ও নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। 

এসময় আশেপাশে যাদের পাওয়া যায় তারা গুলির আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণহত্যা শুরু করেছে তারা। 

এরপর বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গুলি করে হত্যা করা হয়। এদেশের নিরীহ মা-বোনদের ঘর থেকে তুলে নিয়ে জোর করে ধর্ষণ করা হয়। 

সাহসী বাঙালিরা তখন গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করে। 

অবশেষে, ভারতের মিত্র বাহিনী 16 ডিসেম্বর পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সাথে বাহিনীতে যোগ দেয়।

স্বাধীনতার ঘোষণা: 

২৫ মার্চ মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়।

 বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতারের আগে ২৬ মার্চ ভোরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

 পরে মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার গঠন: 

মুজিবনগরে 10 এপ্রিল 1971 সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। 

শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। আর অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কারণ বঙ্গবন্ধু তখন কারাগারে। 

প্রথম প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ: 

৪ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতের মিত্রবাহিনী যৌথভাবে হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। 

৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। 

4 থেকে 12 ডিসেম্বরের মধ্যে, মুক্তিবাহিনী এবং মিত্রবাহিনী একটি যৌথ বড় আকারের আক্রমণ শুরু করে এবং 13 ডিসেম্বরের মধ্যে পাকিস্তানি আক্রমণাত্মক বাহিনী ঘিরে ফেলে। 

নিশ্চিত পরাজয় দেখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের বুদ্ধিজীবীদের বাড়িঘর থেকে অপহরণ করে নির্বিচারে হত্যা করে। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর জয় পায় বাংলাদেশ।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং চূড়ান্ত বিজয়: 

১৬ ডিসেম্বর আক্রমণকারী বাহিনীর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি ৯৩,০০০ সৈন্যসহ ঢাকার সোহরাদী বাগানে সম্মিলিত বাহিনীর প্রধান,

লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ফলে ফাইনালে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

উপসংহার:

নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং লাখো মা-বোনের সম্ভ্রম অর্জিত এই স্বাধীনতা। 

রক্তের সাগর যে স্বাধীনতা জিতেছে আমরা প্রাণ দিয়ে রক্ষা করব। 

স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। সোনার বাংলাদেশ গড়তে সবাই মিলে কাজ করব।